মোরাকাবার গুরত্ব- Shah Sufi Dewanbagi

Sdílet
Vložit
  • čas přidán 16. 02. 2022
  • মোহাম্মদী ইসলামের শিক্ষাটাই মোরাকাবা ভিত্তিক । আপনাকে প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পর মোরাকাবা করতেই হবে । আর ধ্যান বা মোরাকাবার শিক্ষাই ছিল রাসুল (সঃ) শিক্ষা । রাসুল (সঃ) নিজেও দীর্ঘ ১৫ বছর হেরাগুহায় ধ্যান করেছেন । আর এই মোরাকাবার দ্বারাই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করা যায় । আর পরিশুদ্ধ আত্মার দ্বারাই আল্লাহ্‌র দিদার এবং নামাজে মেরাজ লাভ সম্ভব । আর এর জন্য মোরাকাবার বিদ্যা লাগবেই । আসলে যার আত্মা পরিশুদ্ধ হয় তার পক্ষে সব কিছুই জানা সম্ভব, সেটা হয় স্বপ্নের মাধ্যমে বা এলহামের মাধ্যমে । যাদের অন্তর পবিত্র তারা খুব সহজেই ভাল-মন্দ- খারাপ টা বুঝতে পারে । আর এ সংবাদটা পরিশুদ্ধ অন্তর থেকেই আসে ।
    .
    আর বিজ্ঞানও এখন প্রমাণ করছে, আসলে পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি হলেও, তারা বলছে, ধ্যানই সৌভাগ্যের চাবিকাঠি । আসলে এটা এখন বাস্তব প্রমাণিত । কারণ বিজ্ঞানও বলছে ধ্যান করলে মানুষের মেধাশক্তি কিভাবে বৃদ্ধি পায় । অথচ এই ধ্যানের শিক্ষাটা আমাদের রাসুল (সঃ)-ই দিয়ে গেছেন সেই ১৫০০ বছর আগে । আর সেটার প্রমাণ এখন বিজ্ঞানীরা পাচ্ছে । আর তাই তারা অকপটে স্বীকার করতে বাধ্যও হচ্ছে যে, হযরত মুহাম্মদ (সঃ) হলেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব । তারাও Muhammad Law কে সম্মান করে ।
    .
    মোরাকাবা অর্থ ধ্যান, গভীর চিন্তা। সুফি বা সাধু সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রচলিত বিশেষ এক তন্ময়তা বা সম্মোহিত অবস্থা। জগতের সকল ধর্মের নিগুঢ় ব্যবস্থাপত্র হচ্ছে মোরাকাবা। হযরত রসূল (স.) ১৫ বছর একাধারে হেরা গুহায় ধ্যান বা মোরাকাবা করেছেন। নবীজি (স.) হেরাগুহায় ধ্যান সাধনা করে আপন হূদয়কে আলোকিত করেছেন। তিনি সাধনার সর্বোচ্চ স্তরে উপনিত হয়ে আল্লাহর দিদার পান।
    .
    রসূল (স.) ফরমান, “আমার প্রভুকে আমি অতি উত্তম সুরতে দেখেছি” (তাফসীরে রুহল বয়ান)।
    হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, ‘বিশ্বনবী (স.) সিদরাতুল মুনতাহার সন্নিকটে আল্লাহ পাকের দর্শন লাভ করেছিলেন” (তিরমিজী)।
    হযরত আদী ইবনে হাতেম (রা.) কর্তৃক বর্ণিত তিনি বলেন, হযরত নবী করিম (স.) বলেছেন, “তোমাদের মধ্যে এমন কেহ-ই নেই, যার সাথে অচিরেই তার প্রভু কথাবার্তা বলবেন না। সে সময় প্রভু এবং তার মাঝে কোন দোভাষী কিংবা কোন প্রতিবন্ধক থাকবে না” (বুখারি: ৬৯৩৫)।
    .
    নবীজি (স.) এর শেখানো পদ্ধতি তাসাওফ চর্চার ফলে সাহাবাগণের অন্তর আলোকিত হয়। তাইতো নবীজি (স.) এরশাদ করেছেন, “সাহাবাগণ নক্ষত্রতুল্য”। মোরাকাবার শিক্ষার বিষয়টি শরীয়তের চর্চার মধ্যে দেখা যায় না। এ শিক্ষা কেবল খাঁটি পীর বা আউলিয়ায়ে কেরামের মজলিসে প্রচলিত আছে। তরীকতে মোরাকাবা ছাড়া সাধনার স্তর অতিক্রম করার কোন বিধান নেই। মোরাকাবা করলে হূদয়ের কালিমা বিদুরিত হয়ে হূদয় আলোকিত হয়।
    .
    একজন সাধক প্রত্যহ ৫ ধরনের ফায়েজ মোরাকাবার মাধ্যমে কলবে ধারণ করেন। প্রত্যেক নামাজের ওয়াক্তে আলাদাভাবে আল্লাহর পক্ষ থেকে আপন মোর্শেদের সিনাহ হয়ে এ ফায়েজ ওয়ারেদ হয়।
    ১. ফজরের ওয়াক্তে কুয়াতে এলাহীর ফায়েজ। এ ফায়েজ দ্বারা কলবের ৭০ হাজার পর্দার ভেতরের সমস্ত গুনাহর পাহাড় সাফ হয়। সাফ দিলে জিকিরে আনোয়ারীর ফায়েজ পড়ে কলবে ‘আল্লাহ আল্লাহ’ জিকির জারি হয়।
    ২. যোহরের ওয়াক্তে হযরত রাসূল (স.) এর মহব্বতের ফায়েজ। এতে নবীজির মহব্বত দিলে ভরপুর হয়।
    ৩. আছর ও মাগরিবের ওয়াক্তে তওবা কবুলিয়াতের ফায়েজ। এ দ্বারা সকল প্রকার গুনাহ মাফ হয়ে দিল পরিষ্কার হয়।
    ৪. এশার ওয়াক্তে গাইরিয়াতের ফায়েজ। এর দ্বারা নফসের কুখায়েশসহ যাবতীয় খারাবি ধ্বংস হয়ে সিজ্জিন জাহান্নামে দফা হয় এবং দিল সাফ হয়।
    ৫. আর রাতের তৃতীয়াংশে রহমতের ওয়াক্তের ফায়েজ। এর ফলে দিল আল্লাহর রহমতে ভরপুর হয়।
    .
    এভাবে সকল ওয়াক্তের মোরাকাবায় দিলের মধ্যে ফায়েজ পড়ে দিল সাফ হয়। মোরাকাবার জন্য অতি উত্তম সময় হচ্ছে রাতের শেষ প্রহরে রহমতের সময়। এ সময় প্রকৃতি থাকে নিরব, পরিবার পরিজনও থাকেন ঘুমিয়ে। এমন সময়টাই মোরাকাবার জন্য বেছে নেন সাধকগণ। এ সময় আল্লাহপাক বান্দার ডাকে অধিক সাড়া দেন। তিনি বান্দাকে অনুপ্রাণিত করতে থাকেন, তাঁকে ডাকতে বলেন, তাঁর ইবাদত করে তাঁর নৈকট্যলাভের আহ্বান করেন।
    হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত রসুল (স.) বলেছেন, “আমাদের প্রতিপালক প্রতি রাতের যখন শেষ তৃতীয়াংশ অবশিষ্ট থাকে তখন প্রথম আসমানে অবতরণ করেন এবং বলতে থাকেন, হে বান্দা আমার কাছে প্রার্থনা কর, আমি তোমার প্রার্থনা কবুল করব। আমার কাছে তোমার কি চাওয়া আছে, চাও, আমি তা দান করব। আমার কাছে তোমার জীবনের গুনাহর জন্য ক্ষমা প্রার্থনা কর, আমি তোমার গুনাহ মাফ করে দেব” (বুখারী : ৬৯৮৬)।
    .
    মোরাকাবা হল নফল ইবাদত। নফল ইবাদত হল আল্লাহর নৈকট্য লাভের উত্তম পন্থা। হাদিসে কুদসিতে আল্লাহ বলেন, “যখন আমার বান্দা নফল ইবাদত দ্বারা আমার নৈকট্য লাভ করে, তখন আমি তাকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করি, এমতাবস্থায় আমি তার কর্ণ হই, যদ্বারা সে শ্রবণ করে; আমি তার চক্ষু হই, যদ্বারা সে দর্শন করে; আমি তার হাত হই, যদ্বারা সে ধারণ করে; আমি তার পদযুগল হই, যদ্বারা সে হেঁটে বেড়ায়। এমন অবস্থায় সে আমার কাছে যা কিছু চায় আমি সঙ্গে সঙ্গে তা দান করি” (বুখারি : ৬০৫৮)। তাই মোরাকাবা সাধকের জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। মোরাকাবা অন্তরের কালিমাকে পরিস্কার করে দেয়। যার হূদয়ের কালিমা বিদূরিত হয়েছে, সে নামাজে আল্লাহর সাথে কথোপকথন করে। তাই প্রতি ওয়াক্ত নামাজ ও এবাদতের শেষে অন্তত ২ মিনিটের জন্য হলেও নিয়মিত মোরাকাবা অব্যাহত রাখা উচিত। তাহলেই সাধক ধীরে ধীরে আল্লাহর নৈকট্যে পৌঁছে যেতে সক্ষম হবেন।
    #ধ্যান
    #মোরাকাবা

Komentáře •