কোশাম্বী রাজ্যের রাজা উদয়নের মহারাণী শ্যামাবতীর উপাখ্যান পর্ব এক

Sdílet
Vložit
  • čas přidán 9. 09. 2024
  • কোশাম্বী রাজ্যের রাজা উদয়নের মহারাণী শ্যামাবতীর উপাখ্যান পর্ব এক ‎@BuddhoHoda24-zy7mi
    কৌশম্বীতে পরন্তপ নামে একজন রাজা ছিলেন। তিনি একদিন গর্ভিনী মহিষীর সঙ্গে অরুণোদয়ের তাপ সেবনার্থ অবকাশস্থানে উপবিষ্ট হইলেন। মহিষী রাজার শত সহস্র মূল্যের রক্তকম্বল পরিধান করিয়া রাজার সঙ্গে বসিয়া আলাপ করিবার সময় রাজার আঙ্গুল হইতে শত সহস্র মূল্যের অঙ্গুরী আপন আঙ্গুলে পরিধান করিলেন। সেই সময় হস্তি লিঙ্গ পক্ষী আকাশে উড়িয়া যাওয়ার সময় দূর হইতে রক্তকম্বল ভূষিত মহিষীকে দেখিয়া মাংসখণ্ড মনে করিয়া পাখা বিস্তার করিয়া প্রাসাদে নামিল। রাজা পাখির অবতরণ শব্দ শুনিয়া ভীত হইয়া উঠিয়া রাজপ্রাসাদে প্রবেশ করিলেন। রাজমহিষী পূর্ণ গর্ভাবস্থায় থাকাবশত এবং ভীর্ব (জাতি) স্বভাবহেতু সত্বর যাইতে অক্ষম হইলেন। অনন্তর সেই পাখি তাঁহাকে ধরিয়া নখপঞ্জরে রাখিয়া আকাশে উড়িয়া গেল। সেই পাখিগুলি (প্রত্যেকে) পাঁচটা হাতির বল ধারণ করিত। এজন্য সে আকাশে লইয়া গিয়া যথারুচি স্থানে বসিয়া মাংস ভক্ষণ করে। পাখি তাঁহাকে লইয়া যাওয়ার সময় মৃত্যু ভয়ে ভীত হইয়া ভাবিলেন, যদি আমি শব্দ করি (তাহলে) মনুষ্য শব্দ তির্যক প্রাণীদের উদ্বেগজনক। তাহা শুনিয়া আমাকে ফেলিয়া দিবে। এইরূপ হইলে গর্ভ সহিত প্রাণ হারাইব। (পাখি) যে স্থানে বসিয়া আমাকে খাইতে আরম্ভ করিবে সেইখানে শব্দ করিয়া তাহাকে তাড়াইয়া দিব। রাজমহিষী আপন বুদ্ধি কৌশলে চুপ করিয়া রহিলেন। সেই সময় হিমবন্ত প্রদেশে অল্প বর্দ্ধিত মণ্ডলাকারে স্থিত একটি প্রকাণ্ডবটবৃক্ষ ছিল। সেই পাখি হরিণাদি (পশু) সেই বৃক্ষে লইয়া গিয়া খাইত। তদ্রূপ তাহাকেও সেইখানে আনিয়া কোঠরের মধ্য রাখিয়া আগত মার্গের দিকে দেখিতে ছিল। আগত মার্গের দিকে ফিরে চাওয়া তাহাদের স্বভাব। সেই মুহূর্তে রাজমহিষী এখনই ইহাকে তাড়াইয়া দেওয়া উচিত মনে করিয়া দুই হাত উপরে তুলিয়া হাতে এবং মুখে শব্দ করিয়া তাহাকে তাড়াইয়া দিলেন। অতঃপর সূর্য অস্তমিত হওয়ার সময় তাঁহার প্রসব বেদনা উৎপন্ন হইল, সকল দিকে বিচরণশীল মহামেঘ উত্থিত হইল। সুখে পালিত রাজমহিষীর ‘আর্য ভয় করিবেন না’ (এমন) বচনমাত্রও না পাইয়া দুঃখে মুহ্যমান হইয়া সমস্ত রাত্রি নিদ্রা হইল না। রাত্রি গত হইলে মেঘের বিলয় সূর্যোদয় ও তাঁহার পুত্রের জন্ম এক সাথেই হইল। রাজমহিষী মেঘের শীত পাহাড়ের শীত অরুণোদয়ের শীত অনুভব করত জন্মগ্রহণ করিয়াছে ভাবিয়া পুত্রকে উদয়ন বলিয়া নাম রাখিলেন।
    ৪. অল্লকপ্পক তাপসের বাসস্থান সেই বটবৃক্ষের নিকটেই অবস্থিত। তাপস স্বভাবত বৃষ্টির দিনে শীতের ভয়ে ফলমূল সংগ্রহের জন্য বনে প্রবেশ করেন না। সেই বৃক্ষতলে গিয়া সকুণ কর্তৃক খাদিত মাংসের অস্থি আহরণ করিয়া পিটিয়া রস তৈরি করিয়া পান করিতেন। এই জন্য সেই দিনেও অস্থি আহরণ করিব মনে করিয়া সেইখানে গিয়া বৃক্ষতলে অস্থি অন্বেষণ করিবার সময় উপরে শিশুর শব্দ শুনিয়া অবলোকন করিবার সময় মহিষীকে দেখিয়া ‘তুমি কে’ জিজ্ঞাসা করিলেন, ‘আমি মনুষ্য’ স্ত্রী বলিলেন। ‘কিরূপে আসলে?’ ‘হস্তিলিঙ্গ পক্ষী কর্তৃক আনা হইয়াছে’ বলিলে ‘নামিয়া আস্থ কহিলেন (মহিষী) ‘আর্য’ জাতিনাশের হেতু ভয়ঙ্করী।’ ‘তুমি কোন জাতি?’ ‘(আমি) ক্ষত্রিয়া।’ (তাপস) ‘আমিও ক্ষত্রিয়’ তবে ক্ষত্রিয় মায়া বলুন। তাপস বলিলেন। তাহা হইলে বৃক্ষে উঠিয়া আমার পুত্রকে নামাইয়া লউন। তাপস একপার্শ্বে উঠিবার পথ করিয়া উঠিয়া ছেলেটাকে নামাইলেন। (মহিষী) আমাকে হস্তস্পর্শ করিবেন না। তাপস তাহাকে না ছুঁইয়া ছেলেটাকে নামাইলেন। মহিষীও নামিলেন। তাপস তাঁহাকে আশ্রমে আনিয়া শীলভেদ না করিয়াই দয়াবশে লালন পালন করিলেন। মৌমাছি বিহীন মধুও স্বয়ং উৎপন্ন ধান্য আনিয়া পায়সান্ন পাক করিয়া দিতেন। এইরূপে তাপস প্রতিপালন করিবার সময় কিছুকাল পরে মহিষী ভাবিলেন, আমার গমনাগমনের পথ পরিজ্ঞাত নয় ইহার সঙ্গেও আমার বিশ্বাস মাত্রও নাই। যদি এই তাপস আমাদিগকে ছাড়িয়া কোথাও চলিয়া যান তাহলে (আমরা) দুইজনই এইখানে প্রাণ হারাইব। যে কোন একটা কর্ম করিয়া ইহার শীল বিপত্তি ঘটাইয়া যেন আমাকে ছাড়িয়া যাইতে না পারেন তেমন কর্ম করা উচিত। অনন্তর (মহিষী) অসংযত বস্ত্র পরিধান অবস্থায় তাপসকে প্রলোভন দেখাইয়া শীল বিনষ্ট করিলেন, তদবধি উভয়ে একত্রে বসবাস করিলেন।
    ৫. অনন্তর একদিন তাপস নক্ষত্রযোগ অবলোকন করিবার সময় পরন্তপ রাজার নক্ষত্রপাত দেখিয়া ‘ভদ্রে কৌশম্বিতে পরন্তপ রাজা কালপ্রাপ্ত হইয়াছে’ বলিলেন, প্রভু, কেন এইরূপ বলিলেন, তাঁহার সহিত আপনার কোন বৈরীভাব আছে কি? না ভদ্রে তাঁহার নক্ষত্রপাত দেখিয়া এইরূপ বলিতেছি, মহিষী কাঁদিতে লাগিলেন। অতঃপর মহিষী কেন কাঁদিতেছে জিজ্ঞাসা করিলে মহিষী কর্তৃক তাঁহাকে ‘মহারাজ আপন স্বামী’ বলিয়া পরিচয় দেওয়া হইলে (তাপস) বলিলেন, ভদ্রে! কাঁদিবেন না; জন্মিলে মৃত্যু অবশ্যম্ভাবী। প্রভু তাহা জানি। তবেও কেন কাঁদিতেছ? জিজ্ঞাসিত হইলে, আমার পুত্র বংশাধিকারে রাজ্যের যোগ্য, যদি সেইখানে থাকিত শ্বেতচ্ছত্র উত্তোলন করিত, প্রভু এখন মহাবিপদ উদ্ভব হইয়াছে বলিয়া কাঁদিতেছি। ভদ্রে তাহা হউক, চিন্তা করিবেন না। যদি তাহাকে রাজ্যে প্রতিষ্ঠিত করাইতে চাহেন তাহলে আমি তাহার রাজ্যলাভের উপায় করিব।

Komentáře • 4