মায়ার খেলা নৃত্যনাট্য।। "রম্যবীণা"।। কল্যাণী।। (Mayar Khela Dance Drama)

Sdílet
Vložit
  • čas přidán 5. 06. 2023
  • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের
    নৃত্যনাট্য মায়ার খেলা
    বিষয়সংক্ষেপ- সদ্য বিলাত-প্রত্যাগত তরুণ রবীন্দ্রনাথ ১৮৯২ সালে রচনা করেন গীতিনাট্য ‘মায়ার খেলা’। পরে ১৯৩৮ সালের ডিসেম্বর মাসে সেটিকে নৃত্যনাট্যে রূপান্তরিত করেন প্রবীণ বিশ্বকবি। নৃত্যনাট্য ‘মায়ার খেলা’র প্রথম অভিনয় হয়েছিল ১৯৩৯ সালের শান্তিনিকেতনের বসন্ত উৎসবে। গীতিনাট্য ‘মায়ার খেলা’র সাথে নৃত্যনাট্য ‘মায়ার খেলা’র মূল বিষয় অভিন্ন হলেও শেষের তিনটি দৃশ্য থেকে পরিণতিতে আমূল পরিবর্তন ঘটিয়েছেন বিশ্বকবি।
    মানবমনের মোহ-বাসনাকেই রবীন্দ্রনাথ মায়াকুমারী হিসাবে চিত্রিত করেছেন গীতিময়তায়। তারা কুহকশক্তিপ্রভাবে মানবহৃদয়ে নানাবিধ মায়া- সৃজন করে। হাসি, কান্না, মিলন, বিরহ, বাসনা, লজ্জা, প্রেমের মোহ এই-সমস্ত মায়াকুমারীদের ক্রিয়াশীলতা। একদিন নব বসন্তের রাত্রে তারা স্থির করল, প্রমোদপুরের যুবক-যুবতীদের নবীন হৃদয়ে নবীন প্রেম রচনা করে তারা মায়ার খেলা খেলবে। সেই মত নৃত্যনাট্যের শুরু।
    নবযৌবনবিকাশে গ্রন্থের নায়ক অমর সহসা হৃদয়ের মধ্যে এক অর্পূব আকাঙ্ক্ষা অনুভব করে উদাসভাবে জগতে আপন মানসী মূর্তির অনুরূপ প্রতিমা খুঁজতে বের হয়েছে। এ দিকে শান্তা আপন প্রাণমন অমরকেই সমর্পণ করলেও অমর শান্তার হৃদয়ের ভাব না বুঝে অন্যত্র চলে যায়। এদিকে, সখীপরিবৃত হয়ে কেবল মনের আনন্দে হেসেখেলে বেড়ানো প্রমদার কুমারীহৃদয়ে প্রেমের উন্মেষ না ঘটায় সখীরা ভালোবাসার কথা বললে সে অবিশ্বাস করে উড়িয়ে দেয়। অমর খুঁজে খুঁজে প্রমদার নিকটে আপন প্রেম ব্যক্ত করে, কিন্তু সে তাতে ভ্রূক্ষেপও করে না। অশোক এসে প্রেমনিবেদন করলে তাকেও একপ্রকার প্রত্যাখ্যান করে প্রমদা নিজেই। শান্তা নিজের প্রেমের সার্থকতা না পেয়ে অমরের উপেক্ষা আর অবহেলাতে হতাশ হয়ে পড়ে। অমর প্রমদার ক্রীড়াকাননে এসে তার সখীদের কাছে আপন মর্মব্যথা পোষণ করতে করতে বলে যদি ভালোবেসে কেবল কষ্টই সার তবে সাধ করে ভালোবাসবার প্রয়োজন কী? এমন সময়ে সখীদের নিয়ে প্রমদা কাননে প্রবেশ করলে প্রমদাকে দেখে অমরের মনে সহসা এক নূতন আনন্দ নূতন প্রাণের সঞ্চার হল। প্রমদা আকৃষ্টহৃদয়ে সখীদেরকে বলল, অমরকে জিজ্ঞাসা করতে যে ও কি চায়। সখীদের প্রশ্নের উত্তরে অমরের অনতিস্ফুট হৃদয়ের ভাব স্পষ্ট ব্যক্ত হয় না।
    এরপর কুমার প্রমদার কাননে নিতান্ত প্রেমিকসুলভ বিনয়ের সাথে প্রমদাকে প্রেম নিবেদন করলে প্রমদার হয়ে সখীরাই তার সাথে কথা বলে তাকে বিতারণ করে। অমর যখন প্রমদার নিকট এসে সরাসরি আবার নিজের প্রেম ব্যক্ত করল প্রমদা কিছু বলতে না বলতে সখীরা তাড়াতাড়ি এসে অমরকে প্রচুর ভর্ৎসনা করে ফিরিয়ে দিল। ফলে, অমরের অসুখী অশান্ত আশ্রয়হীন হৃদয় সহজেই গৃহমুখে শান্তার প্রতি ফিরল। এই দীর্ঘ বিরহে এবং অন্য সকলের প্রেম থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে অমর শান্তার প্রতি নিজের এবং নিজের প্রতি শান্তার অচ্ছেদ্য গূঢ় বন্ধন অনুভব করার অবসর পেল। শান্তা ও অমরের মিলনোৎসবের মুহূর্তে ম্লান ছায়ার ন্যায় বিষাদপ্রতিমা প্রমদা হঠাৎ কাননে প্রবেশ করলে নিমেষের মধ্যে আত্মবিস্মৃত অমরের মনে আবার সংশয় আর মোহ জেগে ওঠে। প্রমদা নিজের সম্বিত ফিরে পেয়ে বুঝল এই স্থানে আসা তার অনুচিত হয়েছে, শুভ উৎসবের মুখরতা থেকে সে ধীরে বিদায় নিল। কিন্তু আত্মবিড়ম্বনার লজ্জায় লজ্জিত অনুতপ্ত অমর নিজের ভুল বুঝতে পেরে সমস্ত মোহ-প্রেম থেকে মুক্তি চেয়ে সেখান থেকে প্রস্থান করল। মিথ্যা ছলনাময় প্রেমের জাল ছিন্ন করে শান্তাও মুক্তির আস্বাদ গ্রহণ করে মন থেকে অমরকে বিদায় জানিয়ে তার শুভবুদ্ধির উদয়ের প্রার্থনা করলো। পরে মায়াকুমারীগণ প্রবেশ করে পাঁচজন যুবকযুবতীর প্রেম রচনা থেকে তাদের অভিজ্ঞতালব্ধ মতামত ব্যক্ত করে, যার মধ্য দিয়ে রবীন্দ্রনাথের প্রেমভাবনামূলক প্রধান বার্তাটি আমরা পেয়ে থাকি। অবশেষে কারো সাথে কারো মিলন না দেখিয়ে ‘খেলা ভাঙ্গার খেলা’ দিয়ে নৃত্যনাট্যটি শেষ হয়।
    গীতিনাট্যের সঙ্গে নৃত্যনাট্যের বিষয়গত আর পরিণতিগত পার্থক্য এই যে, গীতিনাট্যে মোহগ্রস্ত অমরকে শান্তা ক্ষমা করে গ্রহণ করে, প্রমদা বিষণ্ণহৃদয়ে ফিরে যায়। নৃত্যনাট্যতে কোনপ্রকার মিলন দেখান হয়নি, শান্তা অমরকে আর স্বীকারই করেনি, প্রত্যেকেই যে যার মত করে প্রস্থান করেছে। রবীন্দ্রনাথের প্রেম ভাবনার অন্যতম একটি নাট্যলেখ্য মায়ার খেলা।
    অংশগ্রহণে-
    প্রমদাঃ
    নৃত্যে - অঙ্কিতা আচার্য চক্রবর্তী
    গীতে - পায়েল দাস
    শান্তাঃ
    নৃত্যে- শ্রেয়সী গুপ্ত সেনগুপ্ত
    গীতে - শমালী ভট্টাচার্য (ভাদুড়ি)
    অমরঃ
    নৃত্যে- রাকেশ সরকার
    গীতে - অরিজিৎ গুপ্ত
    অশোকের নৃত্যে- সোমনাথ সরকার
    কুমারের নৃত্যে- জয়ীতা নাথ রায়
    অশোক এবং কুমারের গীতে : রমিত ভাওয়াল
    সখীঃ
    নৃত্যে - রিয়া দাস, সনিয়া চক্রবর্ত্তী, সৌমী সাঁধুখা, সায়ন্তনী বিশ্বাস, অঙ্কিতা রায় ও তিয়াসা দাস।
    গীতে - দীপিকা দাস, রাখী রায়, পায়েল দাস ও শমালী ভট্টাচার্য।
    মায়াকুমারীঃ
    নৃত্যে - -পায়েল হালদার, জয়ীতা দাস ও সুইটি হাজরা।
    গীতে - দীপিকা দাস, রাখী রায়, পায়েল দাস ও শমালী ভট্টাচার্য।
    বাদ্যেঃ
    সেতার : অসিত ভট্টাচার্য
    তবলা : দিব্যেন্দু দে
    শ্রীখোল : অমলেন্দু গোস্বামী
    এসরাজ : উষ্ণিক তরফদার
    মন্দিরা : প্রীতম ছৈয়াল
    মঞ্চসজ্জা ও মায়াকুমারীদের অলঙ্কার নির্মাণ : রিনা মজুমদার
    পরিচ্ছদ ও রূপকল্প : অভিজিৎ সেন
    শব্দ ব্যবস্থাপনা : মণ্ডল ইলেকট্রিক
    আলো : শিবশঙ্কর গায়েন
    সঙ্গীতানুষঙ্গ পরিচালনা : অরিজিৎ গুপ্ত
    নৃত্যকলা পরিচালনা : রাকেশ সরকার
    অনুষ্ঠান সঞ্চালনা : অলোকদ্যুতি নন্দী
    পরিবেষণা- “রম্যবীণা”, কল্যাণী
    ২১/৫/২০২৩
    তাপস সেন কুমার রায় প্রেক্ষাগৃহ, কল্যাণী নাট্যচর্চা কেন্দ্র
    কল্যাণী, নদীয়া

Komentáře • 14