Romantic Abriti - Ja Cheyechi Ja Pabona - Sunil Gangopadhyay

Sdílet
Vložit
  • čas přidán 25. 10. 2018
  • যা চেয়েছি যা পাবো না
    --সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
    -কী চাও আমার কাছে ?
    -কিছু তো চাইনি আমি ।
    -চাওনি তা ঠিক । তবু কেন
    এমন ঝড়ের মতো ডাক দাও ?
    -জানি না । ওদিকে দ্যাখো
    রোদ্দুরে রুপোর মতো জল
    তোমার চোখের মতো
    দূরবর্তী নৌকো
    চর্তুদিকে তোমাকেই দেখা
    -সত্যি করে বলো, কবি, কী চাও আমার কাছে ?
    -মনে হয় তুমি দেবী...
    -আমি দেবী নই ।
    -তুমি তো জানো না তুমি কে !
    -কে আমি !
    -তুমি সরস্বতী, শব্দটির মূল অর্থে
    যদিও মানবী, তাই কাছাকাছি পাওয়া
    মাঝে মাঝে নারী নামে ডাকি
    -হাসি পায় শুনে । যখন যা মনে আসে
    তাই বলো, ঠিক নয় ?
    অনেকটা ঠিক । যখন যা মনে আসে
    কেন মনে আসে ?
    -কী চাও, বলো তো সত্যি ? কথা ঘুরিয়ো না
    -আশীর্বাদ !
    -আশীর্বাদ ? আমার, না সত্যি যিনি দেবী
    -তুমিই তো সেই ! টেবিলের ঐ পাশে
    ফিকে লাল শাড়ি
    আঙ্গুলে ছোঁয়ানো থুতনি,
    উঠে এসো
    আশীর্বাদ দাও, মাথার ওপরে রাখো হাত
    আশীর্বাদে আশীর্বাদে আমাকে পাগল করে তোলো
    খিমচে ধরো চুল, আমার কপাল
    নোখ দিয়ে চিরে দাও
    -যথেষ্ট পাগল আছো ! আরও হতে চাও বুঝি ?
    -তোমাকে দেখলেই শুধু এরকম, নয়তো কেমন
    শান্তশিষ্ট
    -না দেখাই ভালো তবে ! তাই নয় ?
    -ভালো মন্দ জেনে শুনে যদি এ-জীবন
    কাটাতুম
    তবে সে-জীবন ছিল শালিকের, দোয়েলের
    বনবিড়ালের কিংবা মহাত্মা গান্ধীর
    ইরি ধানে, ধানের পোকার যে-জীবন
    -যে জীবন মানুষের ?
    -আমি কি মানুষ নাকি ? ছিলাম মানুষ বটে
    তোমাকে দেখার আগে
    -তুমি সোজাসুজি তাকাও চোখের দিকে
    অনেকক্ষণ চেয়ে থাকো
    পলক পড়ে না
    কী দেখো অমন করে ?
    -তোমার ভিতরে তুমি, শাড়ি-সজ্জা খুলে ফেললে
    তুমি
    তারা আড়ালে যে তুমি
    -সে কি সত্যি আমি ? না তোমার নিজের কল্পনা
    -শোন্ খুকী
    এই মাত্র দেবী বললে
    একই কথা ! কল্পনা আধার যিনি, তিনি দেবী
    তুই সেই নীরা
    তোর কাছে আশীর্বাদ চাই
    -সে আর এমন কি শক্ত ? এক্ষুনি তা দিতে পারি
    -তোমার অনেক আছে, কণা মাত্র দাও
    -কী আছে আমার ? জানি না তো
    -তুমি আছো, তুমি আছো, এর চেয়ে বড় সত্য নেই
    -সিঁড়ির ওপরে সেই দেখা
    তখন তো বলোনি কিছু ?
    আমার নিঃসঙ্গ দিন, আমার অবেলা
    আমারই নিজস্ব--শৈশবের হাওয়া শুধু জানে
    -দেবে কি দুঃখের অংশভাগ ? আমি
    ধনী হবো
    -আমার তো দুঃখ নেই--দুঃখের চেয়েও
    কোনো সুমহান আবিষ্টতা
    আমাকে রয়েছে ঘিরে
    তার কোনো ভাগ হয় না
    আমার কী আছে আর, কী দেবো তোমাকে ?
    -তুমি আছো, তুমি আছো, এর চেয়ে বড় সত্য নেই !
    তুমি দেবী, ইচ্ছে হয় হাঁটু গেড়ে বসি
    মাথায় তোমার করতল, আশীর্বাদ...
    তবু সেখানেও শেষ নেই
    কবি নয়, মুহূর্তে পুরুষ হয়ে উঠি
    অস্থির দু'হাত
    দশ আঙুলে আঁকড়ে ধরতে চায়
    সিংহিনীর মতো ঐ যে তোমার কোমর
    অবোধ শিশুর মতো মুখ ঘষে তোমার শরীরে
    যেন কোনো গুপ্ত সংবাদের জন্য ছটফটানি
    -পুরুষ দূরত্বে যাও, কবি কাছে এসো
    তোমায় কী দিতে পারি ?
    -কিছু নয় !
    -অভিমান ?
    -নাম দাও অভিমান !
    -এটা কিন্তু বেশ ! যদি
    অসুখের নাম দিই নির্বাসন
    না-দেখার নাম দিই অনস্তিত্ব
    দূরত্বের নাম দিই অভিমান ?
    -কতটুকু দূরত্ব ? কী, মনে পড়ে ?
    -কী করে ভাবলে যে ভুলবো ?
    -তুমি এই যে বসে আছো, আঙুলে ছোঁয়ানো থুতনি
    কপালে পড়েছে চূর্ণ চুল
    পাড়ের নক্সায় ঢাকা পা
    ওষ্ঠাগ্রে আসন্ন হাসি-
    এই দৃশ্যে অমরত্ব
    তুমি তো জানো না, নীরা,
    আমার মৃত্যুর পরও এই ছবি থেকে যাবে ।
    -সময় কি থেমে থাকবে ? কী চাও আমার কাছে ?
    -মৃত্যু ?
    -ছিঃ , বলতে নেই
    -তবে স্নেহ ? আমি বড় স্নেহের কাঙাল
    -পাওনি কি ?
    -বুঝতে পারি না ঠিক । বয়স্ক পুরুষ যদি স্নেহ চায়
    শরীরও সে চায়
    তার গালে গাল চেপে দিতে পারো মধুর উত্তাপ ?
    -ফের পাগলামি ?
    -দেখা দাও ।
    -আমিও তোমায় দেখতে চাই ।
    -না !
    -কেন ?
    -বোলো না । কক্ষনো বোলো না আর এ কথা
    আমি ভয় পাবো ।
    এ শুধুই এক দিকের
    আমি কে ? সামান্য, অতি নগণ্য, কেউ না
    তুবি এত স্পর্ধা করে তোমার রূপের কাছে--
    -তুমি কবি ?
    -তা কি মনে থাকে ? বারবার ভুলে যাই
    অবুঝ পুরুষ হয়ে কৃপাপ্রার্থী
    -কী চাও আমার কাছে ?
    -কিছু নয় । আমার দু'চোখে যদি ধুলো পড়ে
    আঁচলের ভাপ দিয়ে মুছে দেবে ?

Komentáře •