শ্রীশ্রীরাম ঠাকুরের উপদেশ প্রদানের পদ্ধতি জানুন, শ্রীঠাকুরের চরণে তুলসী দেওয়া যায় কি না? কৈবল্য ভুবন

Sdílet
Vložit
  • čas přidán 25. 08. 2024
  • ছোট-বড়, ধনী-নির্ধন, পন্ডিত-মূর্খ কাউকেই ঠাকুর আশ্রয়দানে বঞ্চিত করেন নি। তা’ছাড়া মরমী ঠাকুর কাউকেও নিরাশ করেন নি। অভয় দিয়ে সকলকেই তাঁর শ্রীচরণে আশ্রয় দিয়েছেন। ঠাকুর আশ্রিতের ধাত বুঝেই তাকে সেভাবে নির্দ্দেশ বা উপদেশ দিয়েছেন। আশ্রিতের স্বভাবের প্রবণতা, প্রকৃতি, সংস্কার ইত্যাদির প্রতি ঠাকুরের বিশেষ লক্ষ্য ছিল। সে নির্দ্দেশ পালন করে-চলা যার পক্ষে অসম্ভব বা কষ্টকর, ঠাকুর সে নির্দ্দেশ তাকে দেননি।
    এটা করতে কিছুতেই পারবেন না, ওটা আপনাকে করতেই হবে-এ ধরণের ভাষা ঠাকুর কখনও ব্যবহার করেন নি।
    অধিকারীভেদে উপদেশ প্রদানই ছিল ঠাকুরের মূললক্ষ্য বা অভিপ্রায়। অতএব ঠাকুরের আদেশ বা নির্দ্দেশ মোটামুটি ব্যক্তি-সাপেক্ষ বলা যেতে পারে। ঠাকুর যে কথা আমায় বলেছেন, সে কথা শুধু আমারই জন্য। আমার ধাত ও যোগ্যতা বুঝেই ঠাকুর আমাকে নির্দ্দেশ করেছেন। কাজেই, আমার কথা যদি আমি অন্যের উপর চাপাতে যাই তা’হলে ভুল বুঝাবুঝি বাড়বে বই কমবে না। সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকেই এ উক্তিটি করতে আমি সাহসী হয়েছি। প্রিয় ভাইবোনেরা সেজন্য আমায় ক্ষমা করবেন, আশা করি! আমার কল্যাণের জন্য ঠাকুর আমায় যা যা করতে বলেছেন, সবাইকেই তা করতে হ’বে-এ অশোভন জেদ যুক্তিযুক্ত নয়।
    সমভাবে সকলের জন্য একটি নির্দ্দেশই ঠাকুর দিয়েছেন - “নাম করেন, নাম করলেই সব হবে” এবং এ কথা নিশ্চিত যে, সমস্ত বিচার ছেড়ে দিয়ে নিষ্ঠার সাথে ঠাকুরের এ নির্দ্দেশটি শুধু পালন করে চলার চেষ্টা করলেই আমাদের সিদ্ধালাভ অবধারিত। ইতি...... শ্রীশ্রীঠাকুরের শ্রীচরণ আশ্রিত - শ্রীশিতিকণ্ঠ সেনগুপ্ত, শ্রীশ্রীরামঠাকুর-প্রসঙ্গ গ্রন্থ থেকে।
    শ্রীশ্রীঠাকুরের চরণে তুলসী দেওয়া যায় কি না?
    চৌমুহনীর বিনোদ সাধু ঠাকুরকে একদিন জিজ্ঞেস করেছিলেন, শ্রীগুরুর চরণে তুলসীপত্র দেওয়া যায় কিনা! ঠাকুরের উত্তর- “শ্রীগুরুকে পরম ব্রহ্ম মনে করিতে পারিলে দেওয়া যায়।”
    “ন গুরোরধিকং তত্ত্বং ন গুরোধিকং তপঃ।
    তত্ত্বজ্ঞানাৎ পরং নাস্তি তম্মৈ শ্রীগুরবে নমঃ।”
    (গুরুতত্ত্ব হতে শ্রেষ্ঠ তত্ত্ব আর কিছুই নেই। সকল তপস্যার শ্রেষ্ঠ তপস্যা গুরুসেবা। গুরুতত্ত্ব জ্ঞানই সকল তত্ত্বজ্ঞানের সার। অতএব সেই গুরুকে নমস্কার।)
    ভগবান স্বয়ং যে গুরুরূপে আসেন এ ধরণের কথা শাস্ত্রে ভরাই আছে।
    সমগ্র ‘বেদবাণী’তে সত্য, শ্রীভগবান, শ্রীগুরু, শ্রীনাম এক অর্থেই নানা স্থানে ব্যবহৃত হয়েছে; কারণ এসব এক ব্রহ্মেরই দ্যোতক কিন্তু আমাদের পক্ষে মনুষ্যদেহধারী গুরুকে সচ্চিদানন্দ ভাবনা করা খুব সহজ নয়। এইজন্যই তুলসীপত্র কোথায় দেব এ নিয়ে সংশয়।
    শ্রী গুরু, ভগবানের করুণাঘন মূর্ত্তি। গুরু সর্বদেবময়-পরমব্রহ্ম। শ্রী গুরুই একাধারে ব্রহ্মা, বিষ্ণু, মহেশ্বর, আবার কালী, দুর্গা, লক্ষ্মী, সরস্বতী সব কিছু। সুতরাং ঠাকুরকে ভগবান ভাবতে পারলে, তুলসীপত্র কোথায় দেব? এ প্রশ্ন অবান্তর।
    ঠাকুর শ্রীদেহে থাকতে যাঁরা ঠাকুরের শ্রীচরণে তুলসীপত্র দেবার সৌভাগ্য লাভ করেছেন, তাঁদের অভিজ্ঞতার খবরটুকু একটু নেওয়া যাক;
    পরমদয়াল শ্রীশ্রীঠাকুর শ্রীদেহে থাকাকালীন যাঁরা তাঁর রাতুল চরণে তুলসী নিবেদন করার সুযোগ পেয়েছেন, তাঁরা দেখেছেন; নিরভিমান বিগ্রহ শ্রীশ্রীঠাকুর শ্রীমুখে নিরন্তর তুলসীর গুণগান করে চলেছেন, অথচ নিরুদ্বেগে শ্রীচরণে তুলসী গ্রহণ করেছেন। যদি এ কার্য্যে ঠাকুর কাউকে বারণ করে থাকেন, তাহলে বুঝতে হবে, ঠাকুরকে ঈশ্বর জ্ঞান তার হয়নি, অথবা অন্য কোন কারণ থাকতে পারে যা আমাদের অজ্ঞাত।
    ঠাকুরের এক ভাইপো লিখেছেন; তাঁরা একবার সবাই মিলে ঠাকুরের চরণে তুলসী দিচ্ছিলেন, ঠাকুর মুচকি হেসে শুধু বলেছিলেন; “তুলসী তো কেবল নারায়ণের পায়েই দেয়।” এ কথার মর্ম্মার্থ কি? প্রিয় পাঠক-পাঠিকারাই তা ভেবে দেখুন!
    গুরুস্তোত্রে আমরা নিয়তই গুরুকে সাক্ষাৎ ভগবান বলেই বন্দনা ও প্রণাম করি। কিন্তু কার্য্যক্ষেত্রে আমরা অনেকেই তা ভাবতে পারি না, কিংবা তদনুরূপ আচরণে অভ্যস্ত হতে অনেক অসুবিধা বোধ করি। কাজেই তুলসীপত্র কোথায় অর্পণ করব এ সমস্যার সমাধান, যিনি অর্পণ করবেন তিনিই করে নেবেন। এর মধ্যে কোন বাঁধা-ধরা নিয়ম প্রবর্ত্তন করা সঙ্গত নয়। তবে ঠাকুর শ্রীদেহে থাকতে তাঁর চরণ ছাড়া আর কোথাও তিনি তুলসী গ্রহণ করেন নি। তাই চরণ-তুলসী কথাটি আমাদের মধ্যে প্রচলিত।

Komentáře • 12