Kadam Rasul Dargah, Narayanganj || কদম রসুল দরগাহ || নারায়ণগঞ্জ

Sdílet
Vložit
  • čas přidán 6. 09. 2024
  • Kadam Rasul Dargah, Narayanganj || কদম রসুল দরগাহ || নারায়ণগঞ্জ
    কদম রসুল একটি পবিত্র স্থান যেখানে নবী (সাঃ) এর পদচিহ্ন সংবলিত পাথর খন্ড সংরক্ষিত থাকে। মুসলিম বিশ্বে বিভিন্ন দেশে এ রকম পবিত্র স্থানের প্রতি ভক্তি প্রদর্শন করা হয়। মুসলমানদের মধ্যে বিশ্বাস রয়েছে যে, মুহম্মদ (স.) পাথরের উপর দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় সেখানে তাঁর পদচিহ্ন থেকে যায়। মক্কা ফেরত অনেকেই এ ধরনের পদচিহ্ন সংবলিত পাথর খন্ড নিয়ে আসতেন। তাঁরা শ্রদ্ধার সঙ্গে এগুলি বিভিন্ন সৌধে, বিশেষ করে মসজিদের অভ্যন্তরে সংরক্ষণ করতেন, যা কদম রসুল আল্লাহ বা কদম শরীফ বা কদম মোবারক নামে পরিচিত। আরব বিশ্বে ইহুদি ও খ্রিস্টানদের মধ্যে এ রকম পবিত্র স্থানের ধারনা পূর্বে ছিল। মুসলমানদের আগমনের পূর্বে ও পরে দক্ষিণ-পশ্চিম বংলায় ‘ধর্ম-পাদুকার’ (ধর্ম ঠাকুরের পায়ের চিহ্ন) পূজা হত। ভারতেও দেবতা বা দেবীর পবিত্র পদচিহ্নের পূজা প্রথা দেখা যায় বৌদ্ধ ও হিন্দু যুগে। বেশকিছু সংস্কৃত লিপিতে এমন কয়েকটি নাম পাওয়া যায় যা দিয়ে পবিত্র পা পূজা প্রচলনের প্রমান পাওয়া যায়। যেমন, বি পদগিড়ি। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের প্রাচীন সূত্রেও অনুরূপ ‘বুদ্ধ পদ’ নাম পাওয়া যায়। মুসলমানদের রসুল (সা.) এর পদ চিহ্ন সবসময়েই পবিত্র হিসেবে পরিগণিত। রসুল (সা.) এর প্রাচীনতম পদচিহ্ন সংবলিত সৌধটি হচ্ছে জেরুজালেম এর ‘ডোম অব দি রক’। বলা হয়ে থাকে, এখান থেকে মহানবী (স.) মিরাজে গমন করেছিলেন। মিরাজে রওয়ানা হওয়ার পূর্বে তাঁর পা পাথরে ছাপ সৃষ্টি করেছিল। এধরনের আরও কিছু পদচিহ্ন সংরক্ষিত আছে দামেস্কের মসজিদ-ই-আকদাম-এ, যেখানে মুসা নবী(আ:) এর পবিত্র পদচিহ্ন আছে বলে ধারণা করা হয়। আরও রয়েছে, মিশরের কায়রো, তুরস্কের ইস্তান্বুলে এবং সিরিয়ার দামেস্কে। ভারতের বিভিন্ন প্রদেশে বেশ কয়েকটি কদম রসুল রয়েছে। যেমন, দিল্লি ও বাহরাইচ (উত্তর প্রদেশ), আহমদাবাদ (গুজরাট), কটক (উড়িষ্যা) এবং পশ্চিম বাংলার গৌড় ও মুর্শিদাবাদ প্রভৃতি অঞ্চলে। বাংলাদেশে নবীগঞ্জ এর কদম রসুল (নারায়ণগঞ্জ জেলা) এবং চট্টগ্রামে কদম মোবারক (রসুল নগর) এবং বাগিচা হাট মসজিদ, বিখ্যাত। বাংলার প্রাচীনতম কদম রসুল কমপ্লেক্সটি গৌড়ে অবস্থিত। এটি ১৫৩০-১৫৩১ খ্রিস্টাব্দে সুলতান নুসরত শাহ নির্মাণ করেন। জনশ্রুতিমতে তেরো শতকের সাধক জালালউদ্দীন তাবরিজি(রঃ)এর পান্ডুয়ায় ইবাদতখানায় এ পদচিহ্ন সংবলিত পাথরটি পাওয়া যায়। নুসরাত শাহের পিতা সুলতান হোসেন শাহ (১৪৯৪-১৫১৯) এ পাথরটি গৌড়ে নিয়ে এসেছিলেন। গৌড়ের কদম রসুল সৌধটি বাংলার আঞ্চলিক স্থাপত্যিক রীতির বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ। সুলতানি যুগে এ রীতি পূর্ণাঙ্গ রূপ লাভ করেছিলো। কুঁড়েঘর আকৃতির এ সৌধের মাঝে রয়েছে বর্গাকৃতির একটি কক্ষ, যার তিনদিকে রয়েছে বারান্দা। কেন্দ্রীয় গম্বুজ-কক্ষটিতে পদচিহ্ন সংবলিত কালো পাথরটি রক্ষিত আছে। বাংলাদেশে সুপরিচিত কদম রসুলটি নারায়ণগঞ্জের বিপরীতে শীতলক্ষ্যা নদীর পূর্ব পাড়ে অবস্থিত নবীগঞ্জে। সতেরো শতকের প্রারম্ভে মির্জা নাথান কর্তৃক প্রণীত বাহারিস্তান-ই-গায়েবীর বর্ণনা থেকে জানা যায় যে, সম্রাট আকবর এর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণাকারী আফগান নেতা মাসুম খান কাবুলী এ পদচিহ্ন সংবলিত পাথরটি একজন আরব বণিকের কাছ থেকে ক্রয় করেছিলেন। ঢাকার জমিদার গোলাম নবী ১১৯১ হিজরিতে (১৭৭৭-১৭৭৮ সালে) পবিত্র সৌধটি নির্মাণ করেন এবং এর অভ্যন্তরে পবিত্র পাথরটি সংরক্ষিত হয়েছে। এক গম্বুজ বিশিষ্ট সৌধটির সামনে রয়েছে বারান্দা, মধ্যের প্রকোষ্ঠে রয়েছে পবিত্র পাথরটি। সাধারণত এটি একটি ধাতব পাত্রে গোলাপজলে ডুবানো থাকে। পাথরের গায়ে ২৪ সেমি × ১০ সেমি জায়গা জুড়ে অগভীরভাবে পায়ের ছাপ লক্ষ্য করা যায়। উপরের দিকে পায়ের আঙ্গুলের ছাপ স্পষ্ট। সৌধের প্রধান ফটকটি গোলাম নবীর পুত্র গোলাম মুহম্মদ ১২২০ হিজরিতে (১৮০৫-১৮০৬ সাল) তৈরি করেছিলেন।

Komentáře • 4